শনিবার ০৩ মে ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর

Reporter: পরমা দাশগুপ্ত | লেখক: পরমা দাশগুপ্ত | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৫ : ০৯Snigdha Dey
বাংলা সিরিয়ালের ভবিষ্যৎ এখন টিআরপি-র হিসেবনিকেশের দখলে। তার রেশ কতটা পড়ছে চিত্রনাট্যকারদের উপরে? খোঁজ নিলেন পরমা দাশগুপ্ত।
ঢাকঢোল পিটিয়ে সিরিয়াল শুরু। তারপর দু’তিনমাস পেরোতে না পেরোতেই তার ঝাঁপ বন্ধের পালা। এ ছবি এখন আর নতুন নয় বাংলা টেলিভিশনে। আর তাই নতুন মেগা এলে যতটা আনন্দে থাকেন অভিনেতা-কলাকুশলী-সহ গোটা টিম, ঠিক ততটাই থাকে উদ্বেগ। কাজ তো এল, চলবে তো? সেই প্রশ্নটাই তাড়া করে বেড়ায় গোটা ইউনিটকে।
টিআরপি অর্থাৎ টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট দাঁড়িয়ে দর্শকের পছন্দের উপরে। সিরিয়াল পর্দায় এলে দর্শক তা কতটা পছন্দ করলেন, কতক্ষণ দেখলেন, দেখতে দেখতে চ্যানেল বদলালেন কিনা, তার উপরেই দাঁড়িয়ে এই রেটিংয়ের হিসেবনিকেশ। ফলে টিআরপি-র অঙ্কেই বাঁধা থাকে ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা, তার সূত্র ধরে চ্যানেলের আয় এবং ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ, অর্থাৎ তা কতদিন টিকে থাকবে চ্যানেলে। ইদানীং এই হিসেবের টক্কর এতটাই জোরালো যে, টিআরপি তালিকায় প্রথম দশে জায়গা করে নিতে রেষারেষির শেষ নেই। রেটিং পড়ে গেলেই যে সিরিয়াল বন্ধের ভয়। আর তাতে প্রযোজনা সংস্থা বা চ্যানেলের যেমন মোটা অঙ্কের ক্ষতি, তেমনি জড়িয়ে অভিনেতা-কলাকুশলীদের কাজ হারানোর আশঙ্কা।
অগত্যা দর্শককে টেনে রাখার চাপটা গিয়ে পড়ে কাহিনি-চিত্রনাট্য এবং অভিনয়ের জোরের উপরে। কিন্তু অভিনেতারা তো ফুটিয়ে তুলবেন গল্পকে। সেই গল্প শক্তিশালী না হলে, সংলাপ দর্শকের মন কাড়তে না পারলে কি চলে? শেষমেশ তাই বোধহয় সবটা গিয়ে বর্তায় গল্প, চিত্রনাট্য বা সংলাপ লেখার ভার যাঁদের হাতে, সেই লেখকদের উপরেই।
কিন্তু টিআরপি-র ইঁদুরদৌড়ে লাগাতার হাইপয়েন্ট, হুকপয়েন্টের নাটকীয়তায় দর্শককে টেনে রাখতে কতটা চাপ আসে লেখকদের উপরে? জনপ্রিয় হয়ে ওঠার বা জনপ্রিয়তা ধরে রাখার তাড়ায় সৃষ্টির স্বাভাবিক ছন্দ, গল্পের স্বাভাবিক গতি কিংবা ইচ্ছেমতো গল্প বলার স্বাধীনতা সবটাই কি কোথাও প্রভাবিত হয়? পরিস্থিতির চাপেই কি গল্পকে এগিয়ে দেওয়া হয় যেমন খুশি পথে?
দীর্ঘ কয়েক দশক সিরিয়াল পাড়ায় রাজপাট প্রযোজনা সংস্থা ব্লুজ-এর। সংস্থার কর্ণধার তথা লেখক-পরিচালক-চিত্রনাট্যকার স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “আমি সেই ভাগ্যবানদের দলে, যার উপর গল্প নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ চাপ সৃষ্টি করেনি। এখনকার পরিস্থিতিতেও আমার সিরিয়ালগুলো কোনওটা হাজার পর্বের কাছাকাছি, কোনওটা পাঁচশো পর্ব পেরোচ্ছে। আমি এখনও নিজের মতো করেই গল্প বলি। যে গল্পটা যেভাবে বলতে চেয়েছি, যেদিকে তাকে এগিয়ে নিতে চেয়েছি, সেটাই করেছি বরাবর। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ আমার উপর ভরসা রেখেছেন, কখনও হস্তক্ষেপও করেননি, এ নিয়ে কোনও শব্দও খরচ করেননি। তবে হ্যাঁ, শুনতে পাই অনেকের কাছে। সিরিয়াল বন্ধের চাপ থাকে, টিআরপি বাড়ানোর চাপে গল্পও বদলাতে হয় কখনও কখনও। এবং সেই চাপ চ্যানেল, প্রযোজনা সংস্থা বা গোটা ইউনিটের উপরেই থাকে নানা ভাবে।”
লেখক-চিত্রনাট্যকারদের উপরে সেই চাপের বহর কতটা প্রভাব ফেলে?
বেশ কয়েক বছর ধরে সিরিয়াল পাড়ায় কাজ করছেন সুজয় সরকার। তাঁর কথায়, “ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাস্তবতার বাইরে গিয়ে হয়তো কিছু লিখতে হয় কখনও কখনও। অনেক সময়ে তা বেমানান লাগে বা গরমিল ডেকে আনে, একথা সত্যি; কিন্তু টেলিভিশনের ক্ষেত্রে দর্শকের চাহিদার উপর ভিত্তি করে গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই শেষ কথা। কারণ, ধারাবাহিকের লেখকের ধাঁচটাই সম্পূর্ণ আলাদা। মেগা সিরিয়াল মানে বটগাছের মতো একটা বিষয়, যার অজস্র শাখা আর ঝুরি আছে; কিন্তু মূল গল্প হল গাছের ওই মোটা গুঁড়ি। তাই মেগা-সিরিয়ালের নিয়মিত লেখক হতে গেলে গল্পের প্রয়োজনে শাখামৃগের মতো ডালে ডালে লাফ দেওয়ার মানসিকতায় অভ্যস্ত থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। ব্যবসায়িক চাহিদা আর ক্রিয়েটিভিটি কীভাবে ব্যালান্স করতে হবে, সেটা সম্পূর্ণ লেখকের দক্ষতার উপর নির্ভর করে।”
খুব অল্পদিন সিরিয়ালের সংলাপ লিখেছেন সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর লেখালেখি এবং জনপ্রিয়তা অনেকটাই ওটিটির পরিসরে। টিআরপি-র বদলে সেখানে ভিউজের নিরিখে তুল্যমূল্য বিচার চলে জনপ্রিয়তার। সিরিয়ালের সঙ্গে পরিস্থিতিটা কতটা এক বা আলাদা? এক্ষেত্রেও কি প্রভাব পড়ে গল্পের মানে?
“ভিস্যুয়াল মিডিয়ার অন্য মাধ্যমগুলোর সঙ্গে সিরিয়ালের একটা তফাত গড়ে দেয় রোজকার তাড়াহুড়ো। প্রত্যেকদিন সকালে অতগুলো সিন ছাড়া, ব্যাঙ্কিং না থাকলে বাড়তি চাপ, একেকটা করে সিন লেখার ফরমায়েশ— পুরোটাই ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের নিয়মে চলতে থাকে। এত সব সামলাতে গিয়ে লেখার গুণগত মান নিয়ে ভাবার সময় থাকে কি সেভাবে? বরং সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিনের জন্য ভাবনাগুলো তোলা থাকে, যেদিন টিআরপি-র হিসেব আসে। তখন তলিয়ে দেখা হয় গল্পের কোন ট্র্যাকটা কাজ করল, কোনটা করল না এবং কেন। শুধু সিরিয়াল কেন, সিরিজের গল্পও তো এখন ‘ওয়ার্ক করা’ বা না করার উপরে অনেকটা নির্ভরশীল। বিশেষত সিরিয়ালের ক্ষেত্রে ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের এই সিস্টেমটার এই তাড়া, জনপ্রিয় হয়ে ওঠার তাগিদ লেখকদের উপরে পুরোটা না হলেও কিছুটা চাপ তৈরি করে তো বটেই। সময়-নির্ভর সৃষ্টিশীলতা নিশ্চয়ই শেখার বিষয়। কিন্তু কতটা সময় বরাদ্দ থাকে, সেটাও তো একটা প্রশ্ন," বলছেন সম্রাজ্ঞী।
রেটিং নিয়ে এত তোলপাড় যাঁদের জেরে, সেই দর্শকদের একাংশ অবশ্য শুধু ধারাবাহিক না চলাতেই থেমে থাকেননা। বরং সুযোগ পেলেই দেদার ট্রোলে মজে যান। কেউ বলেন, আজকাল সিরিয়ালের গল্প মানেই নাকি গল্পের গরু গাছে ওঠে যখনতখন। কেউ বা গল্প বা চরিত্র নিয়ে তুলোধনা করার এতটুকু সুযোগ ছাড়েন না। সে সবের জেরে অনেক ক্ষেত্রে আরও তলানিতে ঠেকে টিআরপি। যার জেরে চাপ বাড়ে আরও। রেটিং-যুদ্ধে হিমশিম টেলিপাড়া কীভাবে দেখে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের এই রমরমাকে?
স্নেহাশিসের কথায়, “এই ট্রোলিং বিষয়টাই আমার কাছে খুব আপত্তিজনক। এটা জানা খুব দরকার যে, কী বলব এবং কতটা বলব। টেলিভিশন বা সিনেমায় কেউ ধ্বংস করার জন্য আসেন না, সৃষ্টি করার চেষ্টাই করেন। এতে মানুষের কষ্টার্জিত টাকা বিনিয়োগ হয়। সিরিয়াল তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে গেলে প্রযোজনা সংস্থা বা চ্যানেলের বড়সড় আর্থিক ক্ষতি হয়। অনেক মানুষ রোজগারের সুযোগ হারান। ধারাবাহিকের ব্যর্থতা নিয়ে এত ট্রোলিং তাই একটা ভয়ঙ্কর অভিশাপের মতো, যেটা বহু ক্রিয়েটিভ মানুষকে, অভিনেতাদের বা লেখকদের ধাক্কা দেয়, যন্ত্রণা দেয়, ঠেলে দেয় অবসাদে। যাঁরা ট্রোল করেন, কেন করেন জানি না। এত মানুষ, এত জনের অন্নসংস্থান যে সিরিয়ালের সঙ্গে জড়িয়ে, তার প্রতি কি একটু শ্রদ্ধাশীল হওয়া যায় না? আশা করব যাঁরা সিরিয়াল না চললেই ট্রোলিংয়ের পথে হাঁটেন, তাঁদের একটু সুবুদ্ধি আসুক।"
নানান খবর

নানান খবর

'বুলি'ই কি আসলে 'কথা'? 'এভি'র মুখোমুখি হতেই ধরা পড়ল কোন সত্যি!

কার পোশাকে 'মেট গালা'র লাল গালিচায় হাঁটবেন হবু মা কিয়ারা? ছেলে তৈমুরের কাছে কেন ক্ষমা চান সইফ?

জুনে আসছে নতুন সদস্য, কার কাছে ন'মাসের সাধ খেলেন পিয়া চক্রবর্তী?

প্রয়াত অনিল কাপুরের মা নির্মল কাপুর, শোকস্তব্ধ অর্জুন-জাহ্নবী-সোনম

Exclusive: সত্যজিতের ডাকে গোঁফ ফেলে দিলেন ‘নবাব’! ‘শাখাপ্রশাখা’র অভিজ্ঞতা আজও রঞ্জিত মল্লিকের অমূল্য ‘মানিক’

১৭ বছর পর ফিরছে অক্ষয়-সইফ জুটি! কোন পরিচালকের থ্রিলারে ফুটবে পুরনো জুটির ম্যাজিক?

লতা, কিশোর, আরিজিৎ—সবকিছু ইতিহাস পাকিস্তানে! প্রতিবেশী দেশের এফএম থেকে উধাও ভারতীয় সুর

সত্যজিৎকে অভিনব শ্রদ্ধার্ঘ্য, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ এবং ‘চিড়িয়াখানা’-র পোস্টারের আদলে ‘চোর’দের ছবি ঘোষণা!

'আর দেখা হবে না..' বর্ষীয়ান অভিনেতা হরিদাস চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকে পাথর শ্রুতি দাস, প্রিয় 'মিঠুদাদু'কে শেষবার্তায় কী লিখলেন?

ছোটপর্দায় ফিরেই বিয়ের পিঁড়িতে আরিয়ান! চেনেন পাত্রীকে?

কন্নড় গান গাও! অনুষ্ঠানের মাঝেই 'হুমকি', মেজাজ হারিয়ে মুখের উপর কী রগরগে জবাব দিলেন সোনু?

‘ওর জীবনের সেরা চরিত্র এটা-ই’—দীপিকাকে নিয়ে শাহরুখের আবেগঘন মন্তব্য, চোখ ভিজল বলিউডের!

বলিউডে অভিষেক হচ্ছে ববি দেওলের দুই ছেলের! কোন ছবিতে দেখা যাবে আর্যমান ও ধর্মকে?

মেঘলা পাহাড়, তরতাজা প্রেম আর ফেডারেশন-জট পেরিয়ে শুরু রাহুলের ‘মন মানে না’

ক্যাটরিনা-করিনা বাদ, জিতলেন দীপিকা! শাহরুখের ‘কিং’-এ কোন অবতারে দেখা যাবে তাঁকে?

মৃত্যুকে চোখ রাঙিয়ে কুমির ভর্তি লেকে ঝাঁপ দিলেন নওয়াজ! কার জন্য?

টুকটুকে লাল বেনারসিতে মুখেভাত কৃষভির, অক্ষয় তৃতীয়ায় মেয়ের মুখ দেখালেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী

‘হাউজফুল ৫’-এর ঝলকে ঢুকে পড়ল নেটফ্লিক্সের ‘স্কুইড গেম’-এর ঘাতক! দমফাটা কমেডির ভিড়ে এবার মৃত্যুর গন্ধ?